ওয়েলকাম_টু_মাই_ডার্কসাইড লেখক :সারিকা_হোসাইন
-------
বেলা কতো হয়েছে সেটা ঠাহর করাও যেনো বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছে এই নরক তুল্য জঘন্য বাড়ী টিতে।চারপাশে ভ্যাপসা গরম,উটকো বিশ্রী গন্ধ সেই সাথে আলো আর বাতাসের নেই কোনো অস্তিত্ব।থেকে থেকেই অদ্ভুত দুই একটা পোকা মাকড় গায়ে এসে কামড়ে চলে যাচ্ছে।সেই কামড়ে কখনো শরীর চুলকে ঘা হয়ে যাবার উপক্রম হচ্ছে আবার কখনো বা বিষাক্ত কামড়ে ব্যাথায় শরীর অসাড় হয়ে যাচ্ছে।এদিকে সাইবেরিয়ান হাসকি কুকুরটির কথা না বললেই নয়।সতর্ক চতুর বিশ্বস্তু পাহাড়াদারের ন্যায় হিংস্র সবুজ চোখে প্রত্যেকটি বন্দি অপরাধীর কক্ষের সামনে পায়চারি করে চলেছে সমানে।কিন্তু শেরহামের কক্ষের সামনে এসেই কুকুরটি ভয়ানক স্বরে ডেকে উঠছে কিছুক্ষণ বাদে বাদেই।একদিকে চারপাশের মানুষের আহাজারি আরেক দিকে কুকুরটির বিদঘুটে সুর দুই মিলে শেরহামের মাথা পাগল করে তুললো আরো দ্বিগুন হারে।কুকুরের দিকে তাকিয়ে শেরহাম ভয়ঙ্কর দৃষ্টি দিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলো
"এখান থেকে তো আমি নিশ্চিত রূপেই বের হয়ে যাবো।কিন্তু যাবার আগে তোর র*ক্ত খেতে মোটেও ভুলবো না"
কুকুরটি কি বুঝলো কে জানে শেরহামের দিকে তাকিয়ে আরো বিশ্রী ভাবে দাঁত বের করে খেঁকিয়ে উঠলো।
নিজের উপর নিজেই রাগে ফুঁসছে শেরহাম।
"তুই আমাকে বোকা বানিয়ে বড় ভুল করে ফেললি যুবরাজ।এরজন্য তোকে সারাটা জীবন খুব করে পস্তাতে হবে।"
কথা গুলো বলে অজগর এর ন্যায় ফসফস করে শ্বাস টানলো শেরহাম।
যুবরাজ শেরহাম কে হাতে লম্বা একটা শিকল পরিয়ে শিকলটা দেয়ালে আটকানো একটা লোহার আংটার সাথে তালা দিয়ে রেখে চলে গিয়েছে।শুধু তাই নয় কক্ষটিতে না আছে বসার ব্যাবস্থা আর না আছে শোবার ব্যাবস্থা।এক বিন্দু পানি পানের ব্যাবস্থা পর্যন্ত রাখেনি কঠিন হৃদয়ের পুরুষ যুবরাজ শাহীর।পুরো কক্ষ ভর্তি বড় বড় কুচকুচে কালো কালো মশা।যেখানেই কামড়াচ্ছে সেখানটাই ফুলে বড় বড় চাকা উঠে যাচ্ছে।মুহূর্তের ব্যাবধানেই মশা,পোকা,মাকড় শেরহাম কে কামড়ে তার চেহারার নকশাই বদলে ফেললো।
----------
সাদাফ শাহীর এর বিশাল বড় বাংলোর সামনে দাঁড়িয়ে আছে যুবরাজ। দূতলার পানে দৃষ্টি পেতে রেখে পকেটে দুই হাত গুঁজে ঠোঁট কামড়ে এক মনে ভেবে চলেছে নানান ভাবনা।
"নিশ্চই মা পাপাকে শেরহাম সম্পর্কে সব কিছু খুলে বলেছে।পাপাকে আমি ভালো করেই চিনি।তিনি শেরহামের মোকাবেলা করার জন্য তামাম দুনিয়া উল্টে ফেলবে।যে করেই হোক শেরহামের পাঠ আগে চুকাতে হবে,ফুপার সাথে যা হয়েছে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমি পাপার সাথে কখনোই হতে দিবো না"
ফুঁস করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দুই হাতের সহিত উলফ কাট চুল গুলোকে ঠেলে পিছনে নিয়ে ঘড়িতে সময় দেখে নিলো যুবরাজ।সবে রাত সাড়ে ন'টা বাজে।কিন্তু সাদাফ শাহীরের জন্য রাত ন'টা অনেক রাত।যদিও এতক্ষনে তার বিভোর ঘুমে থাকার কথা।কিন্তু আজ সে যুবরাজের জন্য অপেক্ষা করছে।হঠাৎই পিতৃ ভালোবাসায় যুবরাজের দুই চোখ ছলছল করে উঠলো।
শেষ কবে সে তার বাবার সাথে বসে খোলাখুলি কথা বলেছে সেটাই তার মনে নেই।
এদিকে যুবরাজের আসার প্রতীক্ষায় ড্রয়িং রুমে বসে বসে সময় গুনছে সামিনা ।প্রতিটা সেকেন্ড তার কাছে বিষাক্ত লাগছে।পায়ের ব্যাথায় পায়চারি পর্যন্ত করতে পারছেন না।ইদানিং একটু হাঁটলেই ঘুটনীতে প্রচুর ব্যাথা হয়।সামিনা এক মনে হাতের বুড়ো আঙুল কামড়ে চলেছেন আর ভাবছেন―
"কোথায় তুই যুবরাজ বাবা আমার?এতো সময় লাগছে কেনো আজকে তোর বাসায় ফিরতে?কোথাও কোনো অঘটন হয়নি তো?
অঘটন এর কথা হঠাৎ মনে পড়তেই চট করে উঠে দাঁড়ালেন তিনি।শেরহাম যুবরাজকে মা*রার জন্য সর্বক্ষণ তৎপর হয়ে আছে।কখন কি করে বসে কে জানে?ভালোবাসার স্বামীকে হারিয়ে কোনো মতে বেঁচে আছেন তিনি।এই ছেলেটাও যদি হারিয়ে যায় তখন কি আকড়ে ধরে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে শ্বাস টানবেন তিনি?
হঠাৎই কলিং বেলের টুং টাং আওয়াজ হলো।সামিনার ভাবনায় ভাটা পড়লো সেই সাথে দৌড়ে চলে গেলেন দরজা খুলতে।প্রায় মাস খানেক পর ছেলেটা এই বাড়িতে ধূলো দিতে যাচ্ছে।
দরজা খুলে যুবরাজকে দেখতে পেয়েই জাপ্টে ধরলেন সামিনা।যুবরাজের বুকে মুখ লুকিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন।
"তোর চিন্তায় দেখবি আমি ঠিক একদিন মরে যাবো।দিনে দিনে আমার বয়স বাড়ছে,আমি কি এতো এতো চাপ নিতে পারি?"
যুবরাজ সামিনার মাথায় চুমু খেয়ে পিঠে হাত বুলিয়ে বলে উঠলো
"এহ বললেই হলো মরে যাবে?এতো সহজে তোমাকে মরতে দেবো নাকি?
সামিনাকে বুক থেকে টেনে তুলে তার দুই চোখের জল সযত্নে মুছিয়ে দিলো যুবরাজ।এরপর ফিসফিস কন্ঠে শুধালো
"তোমার জাঁদরেল ভাই কি জেগে আছেন?
সামিনা সহসাই যুবরাজের কান মলে দিয়ে বলে উঠলেন
"সব সময় শুধু দুস্টুমি তোর তাই না?উনি তোর জন্য অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করছেন।ভাইজানের শরীরটা ভালো নেই।তাড়াতাড়ি দেখা করে আয় আমি নিচেই আছি।খাবার বাড়বো তোর জন্য"
সামিনার হাতের রান্না খাবার লোভে যুবরাজের চোখ চকচক করে উঠলো।
"এক্ষুনি যাবো আর আসবো"
কথাটি বলেই লাফিয়ে লাফিয়ে সিঁড়ি ধরে সাদাফ শাহীরের কক্ষের দিকে দৌড় লাগালো।
--------
মিসেস তনুজার কেবিনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে রায়াফ।কিছুক্ষন আগেই সে কেবিনের পাশের নার্স স্টেশনে থাকা ডিউটিরত নার্স থেকে তনুজার কেস হিস্টোরি জেনেছে।
উহু নার্স মোটেও এমনি এমনি মুখ খোলেনি।নিজের ডক্টরী আইডি কার্ড দেখানোর পর ধীরে সুস্থে মুখ খুলে সব উগলেছে।
অতিরিক্ত চিন্তা থেকে প্রেসার বেড়ে গেছে অনেকটা।শুধু তাই নয় বিভিন্ন মানসিক হাইপার টেনশনে বুকে চাপ দিয়েছে প্রচন্ড ভাবে।তার এই বুকের ব্যাথা একদিন দুদিনের নয় বরং দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে এই ব্যাথা বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।শুধু তাই নয় ,হৃদযন্ত্রেও বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে।যখন তখন হার্ট এট্যাক করে মারাও যেতে পারেন।
মিসেস তনুজার এতোগুলো রোগের বর্ননা শুনে মাথা ঝিম ধরে গেলো রায়াফের।কি করবে না করবে কিছুই যেনো গুছিয়ে উঠতে পারছে না সে।
"আরে আপনি এখানে?"
কণ্ঠটি কার তা ঠাহর করতে বেশি সময় নিলো না রায়াফ।মেয়েটিকে কিছু বুঝতে না দিয়ে নিজেকে দ্রুত ধাতস্থ করে বলে উঠলো
"জি আমি একটা দরকারে এসেছি"
"আপনার কোনো পেশেন্ট ভর্তি এখানে?
এনির এমন প্রশ্নে কিছুটা ঘাবড়ালো রায়াফ।এরপর চারপাশে চোখ বুলিয়ে বলে উঠলো
"হেমাটোলজি কেবিনে এক পরিচিত আত্মীয় কে দেখতে এসেছিলাম,এখন চলে যাচ্ছি।তা আপনি এখানে কি করে?
"আমার ফ্রেন্ড প্লাস কলিগ রাজ্যের মা এই কেবিনে ভর্তি।রাজ্যের হসপিটালে আসতে একটু দেরি হবে তাই আমাকে পাঠিয়েছে দু ঘন্টার জন্য"
"কেনো উনার বাবা ভেতরে নেই,?
তাৎক্ষনিক প্রশ্নটি করে আকুল চিত্তে উত্তরের আশায় এনির পানে তাকিয়ে রইলো রায়াফ।
এনি সামান্য চিন্তা যুক্ত ভাব মুখশ্রী তে ফুটিয়ে বললো
"আসলে আংকেল আন্টির থেকে আরো বেশি অসুস্থ।"
"আচ্ছা আমি যদি আপনার সাথে উনার কেবিনে ঢুকি আপনি কি মাইন্ড করবেন?আমি প্রমিস করছি আমি কোনো শব্দ করবো না।চুপচাপ থাকবো"
রায়াফের এমন করুন আবদারে নিষেধ করতে পারলো না এনি।
"ঠিক আছে আসুন।
এনির পিছন পিছন স্পেশাল কেবিনের দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করলো রায়াফ।শীর্ন দেহের অবচেতন মানুষটিকে দেখেই বুকের ভেতর টা মুষড়ে উঠলো তার।এনির অগোচরে কোনো মতে নিজের বুক টা চেপে ধরে পাশে থাকা সোফায় ধপ করে বসে পড়লো রায়াফ।
চোখের কোনে জমা জল গুলোকে লুকাতে নীরবে দুই চক্ষু মুদে চুপচাপ দেয়ালে মাথা হেলান দিয়ে বসে রইলো।
হঠাৎই চোখের সামনে ছোট বেলার কিছু মধুর স্মৃতি এসে হানা দিলো।
"কতো মধুর দিনই না ছিলো সেগুলো তবে আজ কেনো সব তিক্ততায় ভরা?
ঘুমন্ত তনুজা হঠাৎই নড়ে চড়ে উঠলেন।হাতে তার ক্যানুলা লাগানো।সেটাতে স্যালাইন পাস হচ্ছে ধীর গতিতে।তনুজার নড়াচড়ার শব্দ হতেই রায়াফ চোখ মেলে তাকালো।অসাবধানতাবশত নড়ার কারনে স্যালাইন ড্রপ বন্ধ হয়ে পাইপে বেশ খানিকটা রক্ত উঠে গেলো তার।এটা দেখে এনি ঘাবড়াতেই রায়াফ দ্রুত উঠে খুব দক্ষ হাতে সেকেন্ডের ব্যাবধানে সব ঠিক করে দিলো।
তনুজা সবটাই অবলোকন করে অশ্রুসিক্ত চোখে রায়াফের পানে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলেন।এরপর হাতের ইশারায় এনিকে ডাকলেন।
কোনো প্রয়োজন ভেবে এনি তনুজার কাছে আসতেই তনুজা ফ্যাসফ্যাসে ধীর কন্ঠে বলে উঠলেন
"তুমি বাইরে যাও, আমি এই ডক্টর এর সাথে একটু একাকী কথা বলতে চাই"
এনি কিছুক্ষন ইতস্তত করে বলে উঠলো
"আব আসলে আন্টি সে আমার বন্ধু,ডক্টর নয়"
কিন্তু এনির কথা মানতে নারাজ তনুজা।এনি মনে মনে ভাবল
"অসুস্থ মানুষ যা ভেবে খুশি থাকতে চায় থাকুক আমার কি?
রায়াফ কে হাতের ইশারায় দ্রুত কথা শেষ করার ইঙ্গিত দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো এনি।
এনি বাইরে বের হতেই রায়াফের হাত খামচে ধরে উঠে বসতে চাইলেন তনুজা।তনুজার অকুলিবিকুলি দেখে রায়াফ অস্থির কন্ঠে বলে উঠলো
"ম্যাডাম আপনি প্লিজ শান্ত হোন, আপনার এমন উত্তেজিত হওয়া ঠিক নয়,আপনার খারাপ লাগছে?ডক্টর ডাকবো?
তনুজা রায়াফের দুই হাত নিজের করপুটে নিয়ে অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিয়ে বলে উঠলেন
"মায়ের চোখ ফাঁকি দেবার সাধ্যি কার আছে খোকন সোনা?
_________
সাদাফ শাহীরের আলো ঝলমলে কক্ষে তার পা দুটোকে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরে মেঝেতে বসে সাদাফ শাহীরের কোলে মাথা রেখে বসে আছে যুবরাজ।যুবরাজের ঘন কেশ গুচ্ছে ধীর গতিতে আঙ্গুলি সঞ্চালনায় মজে আছেন সাদাফ শাহীর।
আজ যেনো তার কাছে কোনো ত্রিশ বছরের যুবক নয় সেই পাঁচ বছরের ছোট যুবরাজ বসে আছে।ছেলের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে অশ্রু বিসর্জন দিলেন সাদাফ শাহীর।
"তোমার মায়ের মৃত্যুর পর আমি আর কেনো বিবাহ বন্ধনে জড়াইনি জানো?শুধু মাত্র তোমার আদরে ভাগ হবে বলে।তুমি আমার কাছে সত্যিকারের অর্থেই যুবরাজ হিসেবে ছিলে।আমি আমার সবকিছু উজাড় করে তোমাকে ভালোবেসে ছিলাম বাবা।তাহলে কোন দুঃখে পাপার সাথে এতোটা দূরত্বের দেয়াল তৈরি করলে?তাহলে কি আমিও আর দশটা বাবার মতো শুধু বাবাই হয়ে রইলাম?ভালো বন্ধু হতে পারলাম না?
সময় ও তারিখ ১৯৯-২৪ ( ০৯:৩০পিএম)
রুম আইডি পাস 33524689
১১
কথা গুলো বলতে বলতে সাদাফ শাহীরের গলা ধরে এলো।আরো কিছু বলতে চাইলেন কিন্তু কান্নার হিড়িকে কিছুই বলতে পারলেন না।
"পাপা আমি সব তোমাকে বলতে চেয়েছিলাম।শুধু একটা কারনেই বলিনি কারন বললে শেরহামের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে তুমি আর শেরহাম তোমার ক্ষতি করে দিতো।কারন ও আমাদের মতো সুস্থ মানুষ নয়।ওর জন্মগত ব্রেন ফাংশনে প্রবলেম আছে।সব সময় ও একটা কল্পনার দুনিয়ায় থাকে।
"তুমি যখন এতো করেই বলছো তাহলে তোমার মামার সাথে এবিষয়ে কথা বলি কি বলো?
রুম আইডি 35148873
পাসওয়ার্ড ১১
সময় এবং তারিখ 20/৯/২০২৪ ( ৩:৩০)
যুবরাজ সহসাই সাদাফ শাহীরের পা শক্ত করে চেপে ধরে বলে উঠলো
"পাপা এই কাজ ভুলেও করো না।মা নিজেই এই খেলার মাস্টার মাইন্ড"
যুবরাজের মুখে নিজের ভালোবাসার স্ত্রীর বড় ভাইয়ের এমন কুকীর্তির আলাপ শুনে অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেলেন সাদাফ শাহীর।
"কাদের ভরসা করেছি আমি এতোদিন?এদের কাছে আমি আমার ছেলের দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলাম?
আর ভাবতে পারেন না সাদাফ শাহীর।তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন
"এর একটা চূড়ান্ত বিহীত আমি করেই ছাড়বো।তার জন্য আমার যা হয় হোক।"
সাদাফ শাহীরের সাথে আরো কিছুক্ষণ বাক বিনিময় করে কড়া হুঁশিয়ারি জারি করে তাকে ভালোভাবে বিছানায় শুইয়ে লাইট নিভিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো যুবরাজ।
'আপাতত শেরহাম কিছুদিন মশার কামড় খাক আমি শাশুড়িকে সুস্থ করে বউ নিয়ে একটু রোমান্স করি।
কথা গুলো আপন মনে ভাবতেই লাজুক হাসলো যুবরাজ।যদিও লজ্জা নারীর ভূষন।তবুও তার আজ হঠাৎই লজ্জা লাগার কারন সে নিজেই খুঁজে পাচ্ছে না।
----------
"কিরে আম্মুর দায়িত্ব তোকে দিলাম আর তুই এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস?
রাজ্যের হঠাত আগমনে হকচকিয়ে উঠে এনি।নিজের ফোন টিপা বন্ধ করে মোবাইল খানা ব্যাগে পুরতে পুরতে বলে উঠে
'আর বলিস না আমার এক ফ্রেন্ডকে আন্টি ডক্টর ভেবে গুলিয়ে ফেলেছে।এখন আমাকে কেবিন থেকে বের করে দিয়ে উনারা দুজন কথা বলছে"
"তোর আবার কোন ফ্রেন্ড?
চিন্তিত ভঙ্গিতে শুধালো রাজ্য।
"ঐযে তোকে বলেছিলাম না"
মুখে লাজুকতার রক্তিম আভা নিয়ে মিইয়ে যাওয়া গলায় উত্তর দিলো এনি ।
রাজ্য এনির বন্ধু নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে নিজের মায়ের চিন্তায় ধাম করে দরজা খুলে কেবিনে প্রবেশ করলো।
কেবিনে ঢুকেই নিজের মায়ের বুকে জাপ্টে ধরে অশ্রু বিসর্জন দেয়া সকালের পরিচিত সেই ছেলেকে দেখে সারা দুনিয়া দুলে উঠলো রাজ্যের।
হাত থেকে ফলমূলের ব্যাগ গুলো নিঃশব্দে মেঝেতে পড়ে গড়াগড়ি খেতে লাগলো।রাজ্য আহত কান্নারত কন্ঠে ডেকে উঠলো
"দাদা ভাইরে"!
Comments
Post a Comment